নিজস্ব প্রতিবেদক •
কাজল শর্মা পিতাঃ ননী শর্মা, সাইফুল ইসলাম পিতাঃ অজ্ঞাত, মোঃ নাজমুস সাকিব পিতাঃ অজ্ঞাত । এরা সকলেই মামলার আসামি ।
অভিযোগ হলো জালিয়াতি । এর আগে অনেক রকম জালিয়াতির কথা শুনা গেছে। কিন্তু এবারেই প্রথম জাহাজের টিকেট জালিয়াতির অভিনব ঘটনা ঘটলো। আর এ জালিয়াতির কেইস পার্টনার হলো এ ত্রিরত্ন।
কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনে কয়েকটি পর্যটন পরিবাহী জাহাজ চালু আছে। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দুটি জাহাজ হলো এম. ভি কর্ণফুলি এক্সপ্রেস ও এম. ভি বার আউলিয়া । এ দুটি ট্যুরিস্ট জাহাজ উখিয়া ইনানী হতে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত যাতায়াত করে। এ বছর পর্যটক বেশি হওয়ায় সেন্টমার্টিন গামী যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে গেছে অনেক গুণ। জাহাজের ধারণ ক্ষমতার আসনের বাইরে টিকেট বিক্রি করার সুযোগ নেই। কিন্তু জাহাজ কর্তৃপক্ষ উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করলো প্রতিদিনই জাহাজ দুটিতে চেপে বসেছে শতশত যাত্রী। তাদের হাতে টিকেট আছে। কর্ণফুলী ক্রুজ লাইন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে তাদের প্রধান টিকেট বিপনন কর্মকর্তা সোহরাব উদ্দিন রাসেলকে বকাঝকা করলো।এবং বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখার নির্দেশনা প্রদান করলো। কর্তৃপক্ষের চাপে বিপনন কর্মকর্তা সোহরাব উদ্দিন রাসেল জাহাজের টিকেট গুলো চেক করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
বিগত ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ইং সকালে ইনানী জেটিতে ফেরার সময় বিকেলে সেন্টমার্টিন জেটিতে টিকেট চেক করা হয়। এসময় দেখা গেলো যাত্রীদের হাতে অসংখ্য জাল টিকেট।
এরপর বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান করে জানা গেলো ত্রিরত্ন কাজল শর্মা, সাইফুল ইসলাম ও সাকিব পারস্পরিক যোগসাজশে এ জাল টিকিট গুলো তৈরি করে যাত্রীদের কাছে বিক্রি করে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার বাণিজ্য করে ফেলেছে।
জালকৃত টিকেটগুলো কাজল শর্মা ট্রাভেলস লিংক নামক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পর্যটকদের কাছে বিক্রি করতো সাইফুল এবং সাকিব।
এ ব্যাপারে কর্ণফুলি ক্রুজ লাইনের প্রধান টিকেট বিপনন কর্মকর্তা বাদী হয়ে বর্ণিত ত্রিরত্নের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন। যার মামলা নং ১০/ ১৫৮। মামলাটির তদন্তের দায়িত্বে দেওয়া হয় সদর থানার পরিদর্শক এসএম শাকিল হাসানকে।
তিনি বলেন, জালিয়াতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান । জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন ।
মামলার বাদী প্রধান বিপনন কর্মকর্তা সোহরাব উদ্দিন রাসেল বলেন, জালিয়াতি চক্রের সাথে জড়িত সদস্যরা কর্ণফুলি জাহাজের নির্দিষ্ট আসনের বাইরে টিকেট বিক্রয় না করেও আসামীদের জালিয়াতির কারণে জাহাজে নানা অবাঞ্ছিত সমস্যার সম্মুখীন হয়। এমনকি জরিমানারও সম্মুখীন হয়। যা মালিক কর্তৃপক্ষের কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত।
তিনি আরো বলেন,আসামীদের এ জালিয়াতির কারণে কোম্পানির আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি সুনামও ক্ষুন্ন হয় এবং ব্যবসায়ীকভাবে মারাত্মক ক্ষতিসাধিত হয়।
আসামীগণ পরস্পর যোগসাজশে ট্রাভেলস এজেন্ট খুলে আমি ও আমার কর্তৃপক্ষের নিকট বিশ্বাস জমিয়ে এই জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে এ জঘন্য প্রতারণার ঘটনা সংগঠিত করেছে। তিনি জড়িতদের যথাযথ শাস্তি কামনা করেছেন।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ রকিবুজ্জামান বলেন, সেন্টমার্টিনগামী কর্ণফুলী ও এম. ভি বার আউলিয়া জাহাজের টিকেট জালিয়াতির সাথে জড়িত ৩ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে । জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-